আদিত্য দেব বর্মনঃ
সুনামগঞ্জে পর্যটকদের নতুন পছন্দের তালিকায় যুক্ত হয়েছে হাওর বিলাস।এখন হাওর বিলাসে ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন।এই জেলার অপর অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রগুলো হচ্ছে টাংগুয়ার হাওর,যাদুকাটা নদী,বারেকটিলা,দেশের সর্ববৃহৎ জয়লান আবেদিন শিমুল বাগান,শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ লেক,ও যাদুকাটা নদী।
সুনামগঞ্জে ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বিভিন্ন পর্যটন স্পট রয়েছে।স্বাধীনতার ৫০বছরেও সরকারিভাবে এসবের কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি।তবুও থেমে থাকেনি সৌন্দর্য পিপাসু ও প্রকৃতি প্রেমীরা।দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রকৃতি প্রেমী ও পর্যটকগণ আসছেন তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে।
এরই মধ্যে স্বল্প সময়ে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে পাহাড় বিলাস,উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন হাওর বিলাস,বোয়াল চত্ত্বর,দৃষ্টি নন্দন কফি হাউজ যা সৌন্দর্য পিপাসু ও পর্যটকদের নতুন ঠিকানার সন্ধান পাওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুনামগঞ্জ জেলাকে আরও আলোচিত করে তুলেছে সম্প্রতি।অল্প সময়ে এসব স্পট গড়ে তোলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে।সুনামগঞ্জ জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি প্রধান খাত হওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে মনে করছেন জেলার সচেতন মহল।
স্থানীয় এলাকাবাসী কথা বলে জানা যায়,উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটন বিকাশের উদ্যোগী হয়ে সীমান্তবতী সলুকাবাদ ইউনিয়নে মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে আন্তর্জাতিক সীমারেখার পাশে চ্যাংবিলে ১০শতক জমির উপর সাদা রংয়ের দৃষ্টিনন্দন কাঠের বেড়া দিয়ে পর্যটকদের বসার জন্য ৮টি বেঞ্চ,পর্যটকদের হালকা খাবারের দুটি দোকান,ছনের দুটি গোলঘর নির্মাণ করে পাহাড় বিলাস নামে পর্যটন স্পট গড়ে তোলেন।
উপজেলা পরিষদের সম্মুখে করচার হাওরের পরিবেশ উপভোগ করার জন্য পানির উপরে ভাসমান দুটি গোলঘর নির্মাণ করে নাম দেন হাওর বিলাস।
এছাড়াও উপজেলার প্রবেশদ্বার কারেন্টেরের বাজার পয়েন্টে বোয়াল মাছের ভাস্কর্য দিয়ে বোয়াল চত্ত্বর নামকরণ করেন।উপজেলা পরিষদের সামনে গাছের নিচে ৫টি গোলঘর করে সেবাচত্ত্বর,নিকুঞ্জ নামে যাত্রীদের জন্য একটি যাত্রী ছাউনি,দৃষ্টি নন্দন কফি হাউজ ও থানার সামনে থেকে উপজেলা পরিষদের শেষ সীমানা সাধারণ মানুষের হেঁটে চলার জন্য দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে উপজেলার পুরো চিত্রটাই পাল্টে দিয়েছেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার।এরপর প্রতিদিনই শতশত মানুষ সেখানে বেড়াতে আসছেন এক পলক দেখার জন্য।
অকাল বন্যা আর পাহাড়ি ঢলে খরচার হাওরে পানি টলমল করছে।এমতাবস্থায় দর্শনার্থীদেরকে আকৃষ্ট করার জন্য বা সৌন্দর্য বর্ধিত করার জন্য তেলের ডাম্পের উপর ভাসমান অবস্থায় হাওর ভিউ ক্যাফেকে সাজিয়ে তুলেছেন।প্রতিদিন খরচার হাওরের নীল স্বচ্ছ পানি আর নয়নাভিরাম,মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে হাজারো দর্শনার্থীরা তাদের প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে আসছেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা কামরুজ্জামান।
তিনি আরও জানান,উপজেলার চিরাচরিত প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মধ্যে সম্প্রতি হাওর বিলাস,বোয়াল চত্ত্বর,দৃষ্টি নন্দন কফি হাউজ উপজেলায় চিত্রটাই পাল্টে ব্যাপক ভাবে আলোচিত হবার পাশাপাশি প্রশংসিত হচ্ছে।প্রতিদিনেই শত শত পর্যটক আসছেন এখানে।পরন্ত বিকেলে ও সন্ধ্যার পর লাইটের আলোয় ভিন্ন এক অনুভূতির জন্ম দেয় হাওর বিলাসে পানিতে ভাসমান কফি হাউজে।যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
শাকিব হায়দার,শরীফ মিয়াসহ আগত পর্যটকগণ জানান,সদিচ্ছা ও শিল্পমন থাকলে অবহেলায় পড়ে থাকা পাহাড় ও হাওরের পরিবেশ,সৌন্দর্যকে কীভাবে সুন্দর করে উপভোগ করা যায় তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার করে দেখিয়ে দিয়েছেন আর উপজেলাকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছেন।উপজেলার প্রকৃতিপ্রেমী,সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন হাওর ও পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছে,পাশাপাশি পর্যটন স্পট গুলোর বিকাশ হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন,উপজেলার পর্যটনষ্পট গুলোর সৌন্দর্য সাধারণ মানুষের কাছে তোলে ধরতে পেরে নিজের কাছেও ভাল লাগছে এই ভেবে যে মানুষের মনে ভালো লাগার মতো কিছু করতে পেরে।এসব স্পটে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসছেন সবাই।