কোরবানি না দিয়ে সেই টাকা দান করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত-ফয়ছল আহমেদ – Channel One BD
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ১০:০৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
টাঙ্গাইল নাগরপুরের বেলতৈলে ফুটবল ফাইনাল টুর্নামেন্ট’২৫ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করলেন জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন বানিয়াচং উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় উসমান নামের একজন গ্রেফতার মিশিগানে ঈদ সাবেক তালামীযের দায়িত্বশীল নিয়ে ঈদ পূর্ণমিলনীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা আপনাদের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঈদুল আযহা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি আত্মত্যাগের প্রতীক- জননেতা মোঃ হাবিবুর রহমান হবি পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- জননেতা মীর আবুল কালাম আজাদ রতন পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির এই ত্যাগের মাধ্যমে প্রিয় বাংলাদেশ থেকে মুছে যাক সকল অপশক্তি – জননেতা মোঃ মাইনুল আলম খান কনক ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা – জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহা- জননেতা মোঃ আতিকুর রহমান আতিক

কোরবানি না দিয়ে সেই টাকা দান করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত-ফয়ছল আহমেদ

অতিথি প্রতিবেূকঃ

কুরবানীর সময় আসলে কারও কারও মধ্যে অদ্ভুত এক মানবতাবোধ জেগে উঠে। এরা কুরবানী না দিয়ে সেই টাকা দান করে দেওয়ার উপদেশ দেন। গতবারের মতো এবারও কেউ কেউ কুরবানী না দিয়ে সেই টাকা দান করে দিয়ে মানবতা উদ্ধার করার সমাধান দিচ্ছেন।
কিন্তু এদের কখনও বলতে শুনবেন না গাড়ি না কিনে দান করে দেন,দামি ফোন না কিনে দান করে দেন, দামি ব্র্যান্ডের কাপড় না কিনে সস্তায় কাপড় কিনেন, বাকি টাকা দান করে দেন। এদের যাবতীয় চুলকানী এবং সমস্যা স্রেফ এক জায়গায়,কুরবানী। আরও স্পেসিফিক্যালি বললে,ইসলাম।

কুরবানী কেন দেওয়া হয়,এর ধর্মীয় মাহাত্য এদের কাছে বর্ণনা করে লাভ নেই,এদের কাছে এসব কোনো বিষয় না। কিন্তু যে তথাকথিত মানবতাবোধ থেকে তারা এই দাবি তোলেন,তাদের সেই হিসেবটাও প্রচণ্ড কাঁচা। কুরবানী যে শুধু একটা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়,বরং এর আর্থ-সামাজিক উপকারও আছে,এই হিসেব যদি তারা বুঝত তবে সেই মানবতাবোধ থেকে হলেও তারা কুরবানী নিজেরা দিত এবং অন্যদের দিতে উৎসাহিত করত।

ধরুন,আপনি কুরবানী দিলেন না,সেই টাকা দান করে দিলেন। এতে কী হলো? শুধু যাদের টাকাটা দিলেন, তারাই উপকৃত হলো। এবং সেটাও খুবই সীমিত একটা সময়ের জন্য।

আপনি যদি কুরবানী দেন তাহলে কী হবে?
১। এদেশে অসংখ্য মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে গবাদি পশু লালন পালন করে। এমন অনেক পরিবার আছে যাদের সারা বছরের খরচ আসে এই কুরবানীর সময়ে পশু বিক্রি থেকে। সারা বছর ধরে তারা পশু লালন পালন করে,ইনভেস্ট করে,শুধু এই আশায় যে কুরবানীর সময় এলে এগুলো বিক্রি করবে,এটাই তাদের জীবিকা।
এখন আপনি যখন একটা কুরবানীর পশু কিনলেন, আপনি শুধু একটা পশু ই কিনলেন না,আপনি একটা পরিবারের জীবিকার টাকা জোগান দিলেন। এই টাকা দিয়েই সেই পরিবারটির সংসার চলবে,ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে,চুলায় আগুন জ্বলবে।

এখন মনে করুন,আপনার উপদেশমতো বাংলাদেশের কেউই কুরবানী দিল না,তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা আটকে যাবে। সারা বছর ধরে তারা যে পশুগুলো বিক্রির জন্য লালন-পালন করছিল,সেগুলোর কী হবে? আপনার দেওয়া অল্প কিছু দান হয়তো সে পেল,সেটা দিয়ে তার কয়দিন চলবে?
আর পশু বিক্রি করে সম্মানজনকভাবে তার যে জীবিকা আসত,এর বদলে আপনার কাছে হাত পেতে দান নেওয়াটা তার জন্য কতটা সম্মানের?
শুধু পশুর মালিক না,পশুর হাট-বাজার,পশু বহনকারী গাড়ি,এমনকি পশুখাদ্য বিক্রির সাথে সংশ্লিষ্ট অসংখ্য মানুষ জীবিকা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়বে।

২। কুরবানী তো শুধু নিজের কোনো উৎসব না। সামাজিকভাবে এর প্রভাব আছে। কুরবানীর পর সেই মাংস তিনভাগ করা হয়। একভাগ নিজের জন্য রেখে এক ভাগ গরীব আত্মীয়স্বজনদের,একভাগ গরীব প্রতিবেশীদের দিয়ে দেওয়া হয়। অসংখ্য মানুষ আছে যাদের মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। শুধু বছরের এই একটা দিন তারা মাংস খেতে পায়। বিশ্বাস না হলে বাংলাদেশের নানা জায়গায় ঘুরে দেখুন,এরকম অসংখ্য মানুষ পাবেন। কুরবানীর মাধ্যমে আপনি শুধু নিজেই পরিবার নিয়ে খেলেন না,আত্মীয়,প্রতিবেশীদের সাথেও শেয়ার করলেন। তাদের পাশে দাঁড়ালেন। কুরবানীর দিন সন্ধার পর গেলে দেখা যায়,যারা কুরবানী দিয়েছে তাদের চেয়ে যারা কুরবানী দেয়নি,তাদের ঘরে মাংসের পরিমাণ বেশি। চারদিক থেকে মাংস এসে ভরে যায় বাড়িতে। অনেক গরীব মানুষ অতিরিক্ত মাংস বিক্রিও করে দেয়। সুবহানআল্লাহ। ধনীদের কাছ থেকে নিয়ে নিয়ে গরীবের ঘর ভরিয়ে দেওয়ার এই সম্প্রীতি আপনি আর কোথায় পাবেন? আপনার ঐ দানের চেয়ে,মানুষ খুশী মনে একে অন্যের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে, এটা কি আরও বেশি সম্মানের,সম্প্রীতির নয়?

৩। এমনকি কুরবানীর ব্যাপক জাতীয় অবদানও আছে। দেশের চামড়াশিল্পের সবচেয়ে বড় জোগান আসে এই কুরবানী থেকে। পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত লক্ষ লক্ষ ব্যবসায়ীরা যেমন রোজার ঈদের দিকে চেয়ে থাকে, তেমনি চামড়া শিল্পের সাথে জড়িত মানুষগুলোও কুরবানীর জন্য অপেক্ষা করে থাকে। এখান থেকে রাষ্ট্রও উপকার পায়। কুরবানী শুধু একটি উৎসব নয়। এর সাথে অর্থনৈতিক,সামাজিক,রাষ্ট্রীয় উপকারও বিদ্যমান। সমাজে সম্প্রীতির বন্ধন,আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া এসব তো আছেই। আর সবকিছু হয় সম্মানের সাথে, ইজ্জতের সাথে। এখন কুরবানীতে সম্মানের সাথে এত এত সমাধান ফেলে,আপনি কেন চাইবেন মানুষ আপনার দান এর জন্য হাত পাতুক? কুরবানীই তো বরং আপনাদের মানবতাবাদী চিন্তার সবচেয়ে সুন্দর সমাধান।



Our Like Page