সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০০ কোটি টাকার সড়ক-সেতু – Channel One BD
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ১০:১০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
টাঙ্গাইল নাগরপুরের বেলতৈলে ফুটবল ফাইনাল টুর্নামেন্ট’২৫ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করলেন জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন বানিয়াচং উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় উসমান নামের একজন গ্রেফতার মিশিগানে ঈদ সাবেক তালামীযের দায়িত্বশীল নিয়ে ঈদ পূর্ণমিলনীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা আপনাদের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঈদুল আযহা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি আত্মত্যাগের প্রতীক- জননেতা মোঃ হাবিবুর রহমান হবি পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- জননেতা মীর আবুল কালাম আজাদ রতন পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির এই ত্যাগের মাধ্যমে প্রিয় বাংলাদেশ থেকে মুছে যাক সকল অপশক্তি – জননেতা মোঃ মাইনুল আলম খান কনক ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা – জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহা- জননেতা মোঃ আতিকুর রহমান আতিক

সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০০ কোটি টাকার সড়ক-সেতু

চ্যানেল ওয়ান বিডি ডেক্সঃ

সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০০ কোটি টাকার সড়ক-সেতু। বন্যার পানিতে সড়ক-সেতু ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ন হয়ে আছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত সুনামগঞ্জের বানভাসি মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে ছেড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। যদিও ঘরে ফিরে দেখতে হচ্ছে, বন্যার পানি তাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে।

বন্যায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক লাখ হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। হাজারের বেশি গবাদি পশু প্রাণ হারিয়ে। ১৫০০ কোটি টাকার সড়ক, ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ২৬ হাজার টিউবওয়েল ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

গত ১৬ জুন থেকে ভয়াবহভাবে উজানের পানি বাড়তে থাকে। নদনদী খাল বিল হাওর উপচে বানের পানি প্রবেশ করে মানুষের ঘরবাড়িতে। কয়েক লাখ মানুষ সংসারের মায়া ত্যাগ করে উঁচু স্থানে আশ্রয় নেন। ১৭, ১৮ ও ১৯ জুন শত বছরের রেকর্ড ভেঙে ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে ডুবে যায় সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ৮০ ভাগ এলাকা। জেলার সরকারি-বেসরকারি ছয় শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্রে দুই লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নেন। সাত দিন ধরে লাখও মানুষ পানিবন্দি থাকেন।

খাবার, বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। এ সময় জেলার ৯০ ভাগ সড়ক ৫ থেকে ১০ ফুট পানিতে ডুবে ছিল। সুনামগঞ্জ সদর, শিল্পনগরী ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর উপজেলায় প্রতিটি বাড়ি বানের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। মানুষ গবাদিপশু হাঁস-মুরগি নিয়ে আশ্রয় নেন উঁচু সড়ক ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। বানভাসিদের উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণে এগিয়ে আসে সেনা নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। তারা প্রত্যন্ত এলাকার থেকে হাজার হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসেন। তবে পানি কমায় মানুষ ঘরে ফিরছেন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানায়, বন্যায় ২৭ জুন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় দুজন, বজ্রপাতে সাত ও পানিতে ডুবে ১৭ জন মারা গেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, বন্যায় এক হাজার ৬৪২টি গরু মহিষ ভেড়া ও তিন লাখ ৮৫ হাজার ৮২৬টি হাঁস মুরগি মারা গেছে।

জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাসেম বলেন, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ২৬ হাজার টিউবওয়েল ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় ১৪ লাখ পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পাঁচটি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে এক লাখ ৮৪ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানীয়জল সরবরাহ করা হয়েছে। পাঁচ হাজার জার বিতরণ করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন আহমদ হোসেন বলেন, বানভাসি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য ১২৩টি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পানিবাহিত রোগের মহামারি হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহ সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। এই সপ্তাহ কেটে গেলে মোটামুটি নিরাপদ। সুনামগঞ্জ সদর ও জগন্নাথপুর উপজেলা পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, বন্যায় ১১ হাজার হেক্টর আউশ ধানের ক্ষেত, দুই হাজার হেক্টর সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এতে ৩০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, বন্যায় ১২০টি সেতু কালভার্টসহ ২০০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সড়ক জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, বন্যার কারণে ২০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এতে ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভাঙা সড়কগুলো সংস্কার করে সাময়িক যানবাহন চলাচলের কাজ করছেন তারা।

সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জি এম সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, আমরা বন্যার পর ৬৫ ভাগ লাইন চালু করতে পেরেছি। ৩৫ ভাগ লাইন এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জ জেলায় বানভাসিদের ত্রাণ দিতে ২০ প্লাটুন সেনাবাহিনী, দুই প্লাটুন নৌবাহিনী ও দুই প্লাটুন কোস্ট গার্ডের সদস্য কাজ করছেন। তারা দুর্গম এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা মাঠে কাজ করছেন। দুর্গত এলাকার ৬০০ আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৩০০টি থেকে বানভাসিরা বাড়ি ফিরে গেছেন। এখনও ৩০০ আশ্রয়কেন্দ্রে ৮০ হাজার মানুষ আছেন। দুর্গত এলাকায় ১১৫৬ টন চাল, এক কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ২৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যার কারণে আনুমানিক ৫০ হাজার কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণের কাজ শেষ হওয়ার পর পুনর্বাসন কাজ শুরু হবে।



Our Like Page