শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :

একখণ্ড সবুজের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলের অপার নৈসর্গে মন্ত্রমুগ্ধ হননা এমন মানুষ খুজেঁ পাওয়া যায়না।মৌলভীবাজরের শ্রীমঙ্গলের আনাচে কানাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রকৃতির অপার সুন্দর্যকে উপভোগ করতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেমন সারা বছর জুড়ে ছুটে আসেন পর্যটকরা ঠিক তেমনি ভাবে ছুটে আসেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা।পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা উচু-নিচু পাহাড় জুড়ে চা বাগান,বিস্তীর্ণ হাওড়ের জলরাশি,অবারিত সবুজ বন-বনানী এখানে সৃষ্টি করেছে অপরূপ সৌন্দর্যের এক উপাখ্যান।তাই প্রকৃতি প্রেমী ও ভ্রমণ পিপাসুদের অন্যতম একটি প্রিয় গন্তব্য স্থান হলো শ্রীমঙ্গল।

সেখানে উপভোগ করার মত অনেক গুলো চমৎকার স্থান রয়েছে।শ্রীমঙ্গলের চা বাগান, বাইক্কা বিল,লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান,মাধবপুর লেকসহ আরও অনেক মনোমুগ্ধ করার মতো স্থান। সেই সব সুন্দর্য মন্ডিত স্থানের পাশাপাশি এবার দেখে আসুন অপূর্ব সৌন্দর্যে ঘেরা স্বর্ণালী ছড়া।প্রাকৃতিক নৈসর্গের এই ছড়াটি তার অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ করছে পর্যটকদের। রাধানগর থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার সামনে গেলেই ছোট্ট একটি ব্রিজের নিচে বয়ে চলা স্বর্ণালী ছড়া্।এই ছড়ার সৌন্দর্য যে কাউকেই বিমোহিত করবে।ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া এই ছড়াটির পানি পাথরের উপড়ে পড়ে এমন ভাবে সোনালি আঁশ তৈরী করেছে যার ফলে এই ছড়াটি উজ্জ্বল হয়ে উঠে তার এক অপূর্ব সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে এখানে।এই অপূর্ব সোনালী আবরণের কারণেই মূলত স্থানীয় ভাবে ছড়াটির নাম স্বর্নালী ছড়া হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।ছড়ার মধ্য দিয়ে আবার একটি ছোট্ট নালা প্রবাহিত রয়েছে।একটু উঁচু থেকে নিচের দিকে স্বচ্ছ পানি পড়ার শোঁ শোঁ শব্দ যেনো সুরের ঝংকার হয়ে বেজে চলেছে এই শব্দ আপনাকে দেবে অপার এক আনন্দ।

স্বর্ণালী ছড়াঃঃ
ছড়া দিয়ে সামান্য হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে বাঁশ বাগানের।এর পাশেই রয়েছে বিভিন্ন ধরণের গাছপালা।স্বচ্ছ সাদা পানির নিচে দেখা যাবে সোনালী সৌন্দর্য।পানির শোঁ শোঁ শব্দে মনে হবে যেনো কোনো বিশাল সোনালী বর্ণের ঝর্ণার পাশে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন আর সুরের ঝংকার ভেসে বেড়াচ্ছে চারপাশটায়।খণ্ড খণ্ড গর্তের উপর থেকে নিচের দিকে পানি পড়ছে অবিরাম ধারায় যা দেখে যে কেউই মুগ্ধ হবেন। ছড়া দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে এগোতে থাকলে দেখতে পাবেন সোনালী আঁশযুক্ত পাথর।এসব পাথরের মাঝে উঁচু থেকে নিচুতে প্রবেশ করলে যে সৌন্দর্য দেখতে পাবেন তা সত্যিই অপরূপ যা চোখেঁ না দেখলে বুজার কোন উপায় নেই। ছড়ার দু পাশে রয়েছে হরেক রকমের নাম জানা না জানা বিভিন্ন বন্য ফুলের ঝোপ। ছড়ার দু-পাশে বাঁশের ঝাড় থাকায় ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজ শুনে মনে হবে প্রকৃতির আরেক অপার আদিরূপ যেনো আপনার একদম সান্নিধ্যে রয়েছে।আরও সামনে এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে বাঁশের তৈরি সুন্দর সাঁকো।নিরব ছায়া ঘেরা এই ছড়ার আশেপাশের প্রকৃতির সুন্দর্য যেনো প্রকৃতি তার নিজ হাতেই ছড়িয়ে দিয়েছে চারিপাশটাতে। প্রকৃতির এই অপার নৈসর্গিক সুন্দর্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে তুলবে।নয়নাভিরাম এই প্রাকৃতিক নৈসর্গের মনোরম স্থানটিকে দেখতে অনেক দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এখানে।আপনিও চাইলেই এই প্রাকৃতিক সুন্দর্যে ঘেরা প্রকৃতির অপার সুন্দর্য মন্ডিত স্থানটিতে ঘুরে আসতে পারেন।

যেভাবে যাবেনঃঃ
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে স্বল্প খরচেই অটোরিকশা,সিএনজি কিংবা নিজস্ব গাড়ি করেও পৌঁছাতে পারবেন রাধানগরে।

কোথায় থাকবেনঃঃ
পযর্টন নগরী হিসেবে পরিচিত শ্রীমঙ্গলে গড়ে উঠেছে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর হোটেল ও রিসোর্ট।থাকার জন্য সবচেয়ে ভাল মানের জায়গা ভানুগাছ সড়কে টি-রিসোর্ট।এছাড়াও রয়েছে হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান (পাঁচ তারকা),রেইন ফরেস্ট রিসোর্ট,টি টাউন রেস্ট হাউজ,হোটেল প্লাজাসহ আরও অনেক গুলো হোটেল ও রিসোর্ট।