মৌসুমে জমজমাট এখন ভাসমান পেয়ারা বাগান।
স্বরূপকাঠি থেকে ফিরে
সরদার রিজন!!
এশিয়ার সব থেকে বৃহত্তর পেয়ারা বাগান গড়ে উঠেছে বরিশালের ঝালকাঠি এবং পিরোজপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় । তথ্যসূত্রে- প্রায় ৩১ হাজার বর্গ একর জমির উপরে গড়ে উঠেছে এই পেয়ারা বাগান, এ অঞ্চলে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি পরিবার পেয়ারা চাষের সাথে জড়িত। পাইকারি এবং খুচরা বিক্রির জন্য প্রধান বাজার হিসেবে পরিচিত আটঘর কুরিয়ানার ভিমরুলী বাজার, রাত ফুরিয়ে সকাল হলেই চাষিরা ডিঙি নৌকায় করে পেয়ারা, স্লোম, আমরা, সহ বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়ে ভাসসান এই পেয়ারা বাজারে উপস্থিত হন এবং তাদের ফলগুলো বিক্রি করেন।
মিন্টু বিশ্বাস নামের এক পেয়ারা ব্যবসায়ি জানান, আজকের বাজার দরে ভালো মানের পেয়ারার মণ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিক্রি হয়েছে এবং ১২ থেকে ১৫ টাকা দরে খুচরা বিক্রি হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ পেয়ারার মৌসুম শ্রাবণ ও ভাদ্র এই ২ মাস চলমান থাকে।
বাগান মালিক সুনিল ব্যাপারি জানান, ভিমরুলীতে ১০০ বছরের পুরনো পেয়ারা বাগান এখনো বেঁচে আছে এবং তা থেকে চাষীরা জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন তবে পেয়ার থেকে আমরা চাষে বেশি লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বাজারে পেয়ারা ক্রয়ের জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা পেয়ারা ক্রয় করে রাজধানীরসহ দেশের অন্যান্য বিভাগ ও জেলা গুলোতে বাজারজাতকরণ করেন।
এই বাজারটি সারা বছর জুড়ে বসলেও প্রাণ ফিরে পায় পেয়ারার মৌসুমে৷ বরিশাল জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিঃ মিঃ দূরে ভিমরুলি গ্রামের আঁকাবাঁকা ছোট্ট খালজুড়ে প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ক্রয়-বিক্রয়। পেয়ারায় পরিপূর্ণ শত শত নৌকা, বিক্রেতারা এখানকার আঁকাবাকা খালে খুঁজে বেড়ায় ক্রেতাদের। আর ক্রেতাদের অধিকাংশই দূরদূরান্ত থেকে আগত পাইকারী ব্যবসায়ি। এ পাইকাররা বড় ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে বাজারে আসেন। ছোট ডিঙি নৌকা থেকে সূলভ মূল্যে পেয়ারা কিনে থাকেন।
ভিমরুলি বাজারটি খালের একটি মোহনায় অবস্থিত যেখানে তিনদিগ থেকে তিনটি খাল এসে মিশেছে। এ বাজারের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৩টা। এসময়ে নৌকার সংখ্যা বেড়ে সর্বোচ্চ সংখ্যায় দাড়ায়।
এছাড়াও, বিভিন্ন স্থান থেকে আশা পর্যটকরা বড় ইঞ্জিনের ট্রলার ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়ান সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভিমরুলী বাজারসহ বিভিন্ন পেয়ারা বাগানে। অনেকেই আবার ট্রলারে সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে আসেন দেখে মনে হয় এযেনো বিয়ের আয়োজন চলছে গোটা ভিমরুলিজুড়ে। পর্যটকদের ভিতরে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকেই লক্ষ্য করা যায় শিশু কিশোর কিংবা বৃদ্ধরাও আসেন পর্যটক হিসেবে।
এখানকার যেকোনো বাগানে মাথাপিছু টিকিট মূল্য ২০ থেকে ৩০ টাকা যার বিনিময়ে কোন পর্যাটক নির্দিষ্ট একটি পেয়ারা বাগান থেকে নিজ হাতে পেরে অগনিত পেয়া খেতে পারেন।