ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে ভিক্টোরিয়া পার্ক – Channel One BD
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
টাঙ্গাইল নাগরপুরের বেলতৈলে ফুটবল ফাইনাল টুর্নামেন্ট’২৫ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করলেন জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন বানিয়াচং উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় উসমান নামের একজন গ্রেফতার মিশিগানে ঈদ সাবেক তালামীযের দায়িত্বশীল নিয়ে ঈদ পূর্ণমিলনীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা আপনাদের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঈদুল আযহা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি আত্মত্যাগের প্রতীক- জননেতা মোঃ হাবিবুর রহমান হবি পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- জননেতা মীর আবুল কালাম আজাদ রতন পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির এই ত্যাগের মাধ্যমে প্রিয় বাংলাদেশ থেকে মুছে যাক সকল অপশক্তি – জননেতা মোঃ মাইনুল আলম খান কনক ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা – জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহা- জননেতা মোঃ আতিকুর রহমান আতিক

ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে ভিক্টোরিয়া পার্ক

শরীফুল ইসলাম

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী একটি স্থান ‘ভিক্টোরিয়া পার্ক’। প্রতি ঘন্টায় এখান দিয়ে যাতায়াত করে হাজারো মানুষ। রাজধানী তথা মূল ঢাকা থেকে সদরঘাটমুখী আগত সবগুলো যানকে আসতে হয় এই ভিক্টোরিয়া পার্ক হয়েই। পার্কটির চারপাশে রয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। দক্ষিণে বাংলাবাজার এবং নদীপথে ঢাকার সাথে যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল সদরঘাট। যেখান দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ঢাকায় আসা-যাওয়া করে। আগত এই মানুষগুলোকে প্রথমেই পার হতে হয় ভিক্টোরিয়া পার্ক।

প্রতিদিন সন্ধ্যা এবং সকলবেলা পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে এই পার্ক। সূর্যের আলো ওঠার সাথে সাথেই শতাধিক মানুষ হাঁটাহাঁটি ও ব্যয়াম করার লক্ষ্যে এখানে এসে থাকে। বেলা গড়ানোর সাথে সাথেই বাড়তে থাকে মানুষের আনাগোনা। আশপাশের স্কুলগুলোতে নিজের সন্তানদের রেখে অভিভাবকরা বিশ্রামের জন্য এসে বসে এখানে। কেউ ব্যস্ত পেপার পড়ায়, কেউ বা মেতে ওঠে আড্ডায়।

স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় ভরপুর থাকে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত এই পার্ক। বিস্তৃত ক্যাম্পাস না থাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই এই পার্কে বসে পড়াশোনা এবং গল্প করতে দেখা যায়। দুই ক্লাসের মাঝের বিরতির সময়টাতে অনেকে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে আসেন এই পার্কে।

বিহঙ্গ, ভিক্টোরিয়া ক্লাসিক, আজমেরী গ্লোরী এর মতো বাসগুলো প্রতিদিন শতশত যাত্রী নিয়ে যাত্রা করে এখান থেকে। প্রতি মিনিটেই পাড়ি পাওয়া যায় এখান থেকে। আসার পথেও পার্কের পাশেই এসে থামে বাসের ইঞ্জিন। বাস থেকে নেমেই যাত্রীদের প্রথমে মুখোমুখি হতে হয় ভিক্টোরিয়া পার্কের। ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে দেশের অন্যান্য স্থানে যাওয়া যাত্রীরা এখান থেকে রিক্সা কিংবা হেঁটেই যান সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে।

এভাবেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে এই পার্ক হয়েই। এখান দিয়ে যাওয়ার সময় শুধু মাস্ক নয়, মাস্কের উপর দিয়েও নাক চেপে ধরতে হয় তাঁদের। কারণ এই পার্ক আর পার্ক নেই, কিছু মানুষের হীনমন্যতার ফলে এটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তাও যেই সেই ময়লা নয়, প্রতিনিয়তই দেখা যায় মানুষ নিজেদের প্রাকৃতিক কাজ সারছেন এই পার্ককে কেন্দ্র করেই। পার্কের মধ্যে দক্ষিণ পাশে কয়েকটি ফুচকা হাউজ থাকায় সেদিকটা দিয়ে কোনমতে চলাচল করা যায়। যদিও এই দোকানগুলো পার্কের মূল সৌন্দর্য নষ্ট করছে। কিন্তু উত্তর পাশের দৃশ্য বড়ই করুণ। একজন মানুষ দাঁড়িয়ে কিংবা বসে তার প্রাকৃতিক কাজ সারছেন এবং তারই সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে আরেকজন পথচারী, এমন দৃশ্য দেখা যায় প্রায়ই। বাইরে থেকে আসা মানুষগুলো হয়তো এসময় নাক চেপে ধরেন, কিন্তু পুরান ঢাকার মানুষদের জন্য এই দৃশ্য নতুন কিছু না, তাই হয়তো গন্ধটাও নাকে লাগে না তাদের!

শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য যে ভিক্টোরিয়া পার্ক এখন দুভাগ হয়ে গেছে! দক্ষিণ পাশে কোনোভাবে মানুষ চলাচল করতে পারলেও উত্তর পাশ তথা পার্কের মূল কেন্দ্র পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড় এবং পাবলিক টয়লেটে! অথচ এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই প্রশাসনের। কথা বলার নেই কেউই!

আশপাশে এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এত এত মানুষের চলাচল সত্ত্বেও এখানে নেই কোনো পাবলিক টয়লেট, আশপাশে কয়েক কিলোমিটার খুঁজেও পাওয়া যাবে না কোনো ডাস্টবিন। ফলে মানুষজন দ্বিধাহীনভাবে পরিবেশ দূষণ করে চলছে থাকছে না কোনো অপরাধবোধও! একটি ঐতিহাসিক স্থান যে এভাবে হারিয়ে যাচ্ছে তা দেখেও না দেখার ভান করছে পৌরসভার লোকেরা। প্রতিদিন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা রাস্তা পরিষ্কার করলেও পার্কের পাশ দিয়েও আসেন না তারা। এব্যাপারে যে বড় ধরণের উদ্যোগ নেওয়া দরকার সে সম্পর্কে একেবারেই দায়সারা ভাব তাদের।

শুধু মানুষের দোষ দিয়েই এই অবস্থায় উন্নতি করা যাবে না। আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তারপরই সচেতন করতে হবে মানুষকে। জনবহুল এই স্থানে প্রয়োজন একাধিক পাবলিক টয়লেট। রাস্তার পাশে স্থাপন করতে হবে ডাস্টবিন। পার্কের ঐতিহ্য রক্ষা করতে পার্কের মধ্য থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করা এখন সময়ের দাবি মাত্র৷

শরীফুল ইসলাম
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা



Our Like Page