মোঃ খাইরুজ্জামান সজিব সিনিয়র রিপোর্টার
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার একটি মাদক মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর জামিন নেন সফিউল্লাহ খান। তার জামিন আদেশে মাত্র ২০ পিস ইয়াবা জব্দের কথা উল্লেখ করা হয়। এই জামিন আদেশে গোপালগঞ্জ কারাগার থেকে বেরিয়ে যান সফিউল্লাহ খান। অথচ তার কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছিল ২২০০ পিস ইয়াবা।
পরবর্তীতে সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে এই জাল-জালিয়াতির হোতা ছিলেন মোকলেস মোল্যাসহ আরও ১৪ জন। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা এই মোকলেস মোল্যাকে এবার প্রকাশ্যে দেখা গেছে। গত ১৫ জানুয়ারি চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় কাশিয়ানীর ফুকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ ইশতিয়াক পটুর ওপর হামলা করে আলোচনায় এসেছেন তিনি। এ ঘটনায় পরদিন কাশিয়ানী থানায় মোকলেস মোল্যাসহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আসাদ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি।
এর আগে ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ‘২২০০ পিস ইয়াবা বদলে মাত্র ২০ এবং ৩২০০ হয়ে যায় ৩২০ পিস!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই জাল-জালিয়াতির ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর উচ্চ আদালতের সহকারী রেজিস্ট্রার (ফৌজদারি-২) জাকির হোসেন পাটোয়ারী মামলা করেন। মামলা নম্বর-২৫। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্ত করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক সুলতান হোসেন।
২০২১ সালের ৩১ আগস্ট ঢাকার আদালতে দাখিল করা হয় ওই মামলার চার্জশিট। চার্জশিটে মোকলেস মোল্যাসহ মোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডি।
সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, গোপালগঞ্জ সদর থানার ইয়াবা জব্দের মামলায় জামিন পেতে ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ আদালতে আবেদন করেন আসামি সফিউল্লাহ খান। বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ২০১৮ সালের ৩০ জুন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানায় একটি মামলা হয়।
মামলা নম্বর-৩৯। মাদকের ওই মামলার আসামি মোকলেস মোল্যা গ্রেফতার হয়ে সফিউল্লাহর সঙ্গেই কারাগারে আটক ছিলেন। সেখানে দুজনের পরিচয় হয়। সফিউল্লাহর জামিনের ব্যবস্থা করে দেন মোকলেস। কাশিয়ানী থানায় মঙ্গলবার হওয়া মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি কাশিয়ানীর তারাইল ভূমি অফিসসংলগ্ন ২০ শতাংশ জমি কেনেন ওয়াহিদুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি। এই জমি কেনার পরই মোকলেস মোল্যা তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ১৫ জানুয়ারি আবারও চাঁদা চেয়ে হুমকি-ধমকি দেন। ওই ব্যক্তি ফুকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ইশতিয়াক পটুকে জানান। পরে তারাইলে চেয়ারম্যানের অফিসে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তাদের ওপর হামলা শুরু করেন মোকলেস মোল্যা, আলামিন শেখ, আশিকুর রহমান সুভন এবং আলামিন হোসেনসহ আরও ২-৩ জন। জানা গেছে, মোকলেস মোল্যার বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন, ধানমন্ডি, খুলনার ডুমুরিয়া এবং সিলেটের কোতোয়ালি থানায় একাধিক মাদকের মামলা আছে।