ফিতরা যেভাবে ঠিক করবেন,যাঁদের দেবেন – Channel One BD
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০৪:৪১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
টাঙ্গাইল নাগরপুরের বেলতৈলে ফুটবল ফাইনাল টুর্নামেন্ট’২৫ অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করলেন জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন বানিয়াচং উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় উসমান নামের একজন গ্রেফতার মিশিগানে ঈদ সাবেক তালামীযের দায়িত্বশীল নিয়ে ঈদ পূর্ণমিলনীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা আপনাদের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঈদুল আযহা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি আত্মত্যাগের প্রতীক- জননেতা মোঃ হাবিবুর রহমান হবি পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা- জননেতা মীর আবুল কালাম আজাদ রতন পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির এই ত্যাগের মাধ্যমে প্রিয় বাংলাদেশ থেকে মুছে যাক সকল অপশক্তি – জননেতা মোঃ মাইনুল আলম খান কনক ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত পবিত্র ঈদুল আযহা সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের ঘনঘটা – জননেতা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বপন মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহা- জননেতা মোঃ আতিকুর রহমান আতিক

ফিতরা যেভাবে ঠিক করবেন,যাঁদের দেবেন

শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী:

সমাজের দুস্থ,অসহায়,দরিদ্ররাও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন,সে জন্য সদকাতুল ফিতর বা ফিতরার বিধান। ফিতরা ঈদের নামাজের পূর্বে প্রদান করতে হয়। হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর জমানায় আমরা সদকাতুল ফিতর প্রদান করতাম এক সা (তিন কেজি তিন শ গ্রাম প্রায়) পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য। তিনি বলেন,তখন আমাদের খাদ্য ছিল যব,কিশমিশ,পনির ও খেজুর। (বুখারি, খণ্ড: ১,পৃষ্ঠা: ২০৪)।

তিনি আরও বলেন,আমরা সদকাতুল ফিতর প্রদান করতাম এক সা খাদ্যদ্রব্য,যেমন এক সা যব,এক সা খেজুর,এক সা পনির,এক সা কিশমিশ। (বুখারি, খণ্ড: ১,পৃষ্ঠা: ২০৫)।

ঈদের দিন সকাল বেলায় যিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ ও ব্যবসাপণ্যের) মালিক থাকবেন,তাঁর নিজের ও পরিবারের ছোট–বড় সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা তার প্রতি ওয়াজিব। ফিতরা দ্বারা রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ হয়ে যায়।

সদকাতুল ফিতর একটি ওয়াজিব ও ফজিলতপূর্ণ আমল। তাই যাঁরা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন,তাঁদের ফিতরা প্রদান করা সুন্নত ও নফল ইবাদত। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন,তখন আমরা ছোট–বড়,মুক্ত ক্রীতদাস সবার পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর প্রদান করতাম এক সা খাদ্য,অর্থাৎ এক সা পনির বা এক সা যব বা এক সা খেজুর অথবা এক সা কিশমিশ। আমরা এভাবেই প্রদান করছিলাম। একবার হজরত মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) হজ বা ওমরা উপলক্ষে মদিনায় এলেন, তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে মিম্বারে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। তখন তিনি আলোচনা করলেন সে বিষয়,যে বিষয়ে মানুষ প্রশ্ন করেছে। তিনি বললেন,আমি দেখছি শামের দুই মুদ (নিসফ সা বা পৌনে দুই কেজি) আটা সমান হয় (মূল্যমান হিসেবে) এক সা (তিন কেজি তিন শ গ্রাম) খেজুরের। অতঃপর মানুষ (সাহাবায়ে কিরাম ও তাবিয়িগণ) এই মত গ্রহণ করলেন।
(মুসলিম, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৩১৭-৩১৮)।

নির্ধারিত খাদ্যদ্রব্য,পণ্যসামগ্রী বা তার মূল্যে টাকায়ও ফিতরা আদায় করা যায় এবং অন্য কোনো বস্তু,যেমন পোশাক-আশাক,ঈদের বাজার ইত্যাদি কিনেও দেওয়া যায়। পিতা-মাতা ও ঊর্ধ্বতন এবং ছেলে-মেয়ে ও অধস্তন এবং স্ত্রীকে ওয়াজিব সদাকা,ফিতরা ও জাকাত প্রদান করা যায় না। একজনের ফিতরা অন্যজন প্রদান করলেও আদায় হয়ে যাবে। সদকাতুল ফিতর গ্রহীতার সুবিধার জন্য রমজানেও প্রদান করা যাবে।

ফিতরা আটা বা গমও এক সা (তিন কেজি তিন শ গ্রাম) দেওয়া উত্তম। হজরত হাসান বসরী (র.) বর্ণনা করেন,হজরত আলী (রা.) বললেন: আল্লাহ যখন তোমাদের প্রাচুর্য দিয়েছেন, তোমরাও উদার হও,গমও এক সা দাও।
(নাসায়ী,খণ্ড: ১,পৃষ্ঠা: ২৬৮-২৭০)।

চালের মধ্যে উক্ত তিনটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান এবং সৌদি আরবসহ সব আরব দেশ এবং প্রায় সব মুসলিম দেশ বর্তমানে চালের হিসাব গ্রহণ করেছে। মুজতাহিদ ফকিহরা বলেন,যেখানে যা প্রধান খাদ্য,তা দ্বারা ফিতরা প্রদান করা শ্রেয়।

ইমাম আজম হজরত আবু হানিফা নুমান ইবনে সাবিত (র.)–এর মতে,অধিক মূল্যের দ্রব্য দ্বারা ফিতরা প্রদান করা উত্তম,অর্থাৎ যা দ্বারা প্রদান করলে গরিবদের বেশি উপকার হয়, সেটাই উত্তম।

ফিতরা তাঁদের দেওয়া যায়,জাকাত যে আটটি খাতে প্রদান করা যায়। কোরআন করিমের বর্ণনা,মূলত সদাকাত হলো ফকির,মিসকিন,সদাকাকর্মী,অনুরক্ত ব্যক্তি ও নওমুসলিম, ক্রীতদাস,ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি,আল্লাহর পথে (ইসলাম সুরক্ষার জন্য),বিপদগ্রস্ত বিদেশি মুসাফির ও পথ সন্তানদের জন্য। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও পরম কৌশলী। (সুরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ৬০)।

নির্ধারিত খাদ্যদ্রব্য,পণ্যসামগ্রী বা তার মূল্যে টাকায়ও ফিতরা আদায় করা যায় এবং অন্য কোনো বস্তু,যেমন পোশাক-আশাক,ঈদের বাজার ইত্যাদি কিনেও দেওয়া যায়। পিতা-মাতা ও ঊর্ধ্বতন এবং ছেলে-মেয়ে ও অধস্তন এবং স্ত্রীকে ওয়াজিব সদাকা,ফিতরা ও জাকাত প্রদান করা যায় না। একজনের ফিতরা অন্যজন প্রদান করলেও আদায় হয়ে যাবে। সদকাতুল ফিতর গ্রহীতার সুবিধার জন্য রমজানেও প্রদান করা যাবে।

নিজের মতো করে হিসাব করে ফিতরা প্রদান করুন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,তোমার হিসাব নেওয়ার আগে তুমি নিজের হিসাব নিজে করো,মিজানে তোমার আমল ওজন করার আগে তোমার নিজের আমল নিজেই ওজন করো। (তিরমিজি)।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব,বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি,সহকারী অধ্যাপক,আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।



Our Like Page