শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে নাগরপুর উপজেলা বিএনপি’র সাংবাদিক সম্মেলন ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী নাগরপুরে শহীদ ক্যাডেট স্কুলে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, নাগরপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত জয়তুন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ “জনতার সময়” অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক হলেন কাজী মোস্তফা রুমি ডুমুরিয়ায় ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত নোয়াখালীতে সি‌লেট-চট্টগ্রাম ফ্রেন্ড‌শীপ ফাউ‌ন্ডেশনের মে‌ডি‌কেল ক্যাম্প অনু‌ষ্ঠিত জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী ৭ জন আইওআই(IOI) তে বাংলাদেশের প্রথম স্বর্ণ পদক লাভ করেছেন সিলেটের দেবজ্যোতি দাস সৌম্য

ধ্বংসের মুখে রামপাশায় হাছন রাজার ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি

ফারহানা বেগম হেনাঃ

রামপাশার জমিদার বাড়ি সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলায় অবস্থিত এটি একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। এটি বিশেষ করে মরমি কবি হাছন রাজার বাড়ি হিসেবে বেশ পরিচিত এবং বাড়িটি ইতিহাসের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য কে বহন করে চলছে কালের সাক্ষী হয়ে।

অন্যান্য জমিদার বাড়ি থেকে এই জমিদার বাড়িটি একদমই ভিন্ন। এটি ইতিহাসের পাতায় আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে। কারণ এটি মরমি কবি হাছন রাজার জমিদার বাড়ি। হাছন রাজার জমিদার বাড়ি হিসেবে এটি অধিক পরিচিত সকলের কাছে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়,হাছন রাজার পূর্ব পুরুষরা ছিলেন হিন্দু ধর্মালম্বী। এই জমিদার বাড়ির মূল প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। একটি সূত্র অনুযায়ী জানা যায়,এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ধরা যায় বিরেন্দ্রচন্দ্র সিংহদেব (বাবু খান) কে। তিনিই হিন্দু ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। হাছন রাজার পিতা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন উক্ত জমিদারী এলাকার একজন প্রভাবশালী জমিদার। তার আওতায় দুই এস্টেটের অর্থাৎ দুই এলাকার জমিদারী ছিল। এর একটি ছিল রামপাশায়,আরেকটি ছিল সুরমা নদীঘেষা লক্ষণশ্রীতে।

হাছন রাজারা ছিলেন দুই ভাই। তার বাবার মৃত্যুর পরে রামপাশার জমিদারী দেখাশুনা করতেন তার বড় ভাই। আর লক্ষণশ্রীর জমিদারী দেখাশুনা করতেন হাছন রাজা। কিন্তু হঠাৎ ৩৯ বছর বয়সে তার বড় ভাই মারা গেলে দুই জমিদারীর দায়িত্ব এসে পড়ে হাছন রাজার হাতে।

এরপরই তিনি এই দুই জমিদারী এলাকা একাই সামলাতে থাকেন। প্রথম জমিদারী বয়সে হাছন রাজা ছিলেন একজন ভোগবিলাসী জমিদার। কথিত আছে পরবর্তীতে এক আধ্যাত্নিক স্বপ্নের মাধ্যমে তার জীবনের মোড় একেবারেই পাল্টে যায়। তিনি বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে দিয়ে সাধারণভাবে চলাফেরা করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত পরিণত বয়সে তিনি বিষয় সম্পত্তি মানুষের মাঝে বিলিবণ্টন করে দরবেশী-জীবন যাপন করেন। উল্লেখ যোগ্য অনেক আধ্যাত্মিক গান রচনা করেন তিনি। তার উদ্যোগেই হাসন রাজা এম.ই.হাই স্কুল,অনেক গুলো ধর্ম প্রতিষ্ঠান,ও আখড়া স্থাপিত করেন।

আজ সময়ের বিবর্তনে অযত্ন ও অবহেলায় হাছন রাজার একমাত্র স্মৃতি বিজড়িত এই জমিদার বাড়িটি এখন ধ্বংসের মুখে। বাড়ির দেয়ালে শেওলা ও ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। কালের সাক্ষী এই ঐতিহাসিক বাড়িটি দেখার জন্য আজও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন পর্যটকরা। স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন,ঐতিহাসিক এই হাসান রাজার বাড়িটি কালের সাক্ষী হয়ে অর্ধ মৃত ভগ্ন অবস্থায় রয়েছে যা মোটেই কাম্য নয়। অচিরেই যদি এই ঐতিহাসিক বাড়িটি যথাযথ ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না নেয়া হয় তা হলে কালের সাক্ষী এই ঐতিহাসিক বাড়িটি হারিয়ে যাবে চিরতরে। এই ইতিহাসের ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্য বহণ করা জমিদার বাড়িটিকে আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখা উচিৎ। হাসন রাজার এমন অনেক ঐতিহাসিক জিনিস আছে তাও আজ বিলিন হওয়ার পথে যা আমাদের জন্য মোটেই কাম্য নয়। আগামী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে হলেও আমাদের এই ঐতিহাসিক ঐতিহ্য কে টিকিয়ে রাখতে হবে।

স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন,কতৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি কতৃপক্ষ অচিরেই যেনো এই ঐতিহাসিক বাড়িটিকে যথাযথ ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করেন ও এই ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্য কে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করেন আগামী প্রজন্ম ও দেখতে আসা পর্যটকদের জন্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাড়িটিকে দেখতে আসা
পর্যটকরা যেনো এই বাড়িটির ও হাসান রাজার সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানতে পারেন।



Our Like Page