কাজী মুহিত(যুক্তরাষ্ট্র,মিশিগান)আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি:
আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে -এক্সে (আগেকার টুইটার) পোস্ট করা ইলন মাস্কের এই ভোটাভুটিতে ২৪ ঘন্টায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ অংশ নেয়। ৬৫.৪ শতাংশ নতুন দলের পক্ষে “হ্যাঁ” মত দেয়। এরপর, আজ (শনিবার) বিকেলে তিনি ঘোষণা করলেন, “স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে নতুন দল আমেরিকা পার্টি”।
এক্সে তিনি লিখলেন, “অপচয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে আমাদের দেশকে দেউলিয়া করার কথা বলতে গেলে, আমরা গণতন্ত্র নয়, একদলীয় ব্যবস্থায় বাস করি। আজ, আপনাকে আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমেরিকা পার্টি গঠিত হয়েছে।”
শনিবার ৪ঠা জুলাই ২০২৫ ইং বিকেলে মাস্কের এ পোস্ট দেখে তার একসময়ের কঠিন মিত্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কী বলেছেন অনুসরণ করা যায়নি। অনুমান করা যায়, প্রেসিডেন্টের উপহাস সবার সেরা হবে।
আমেরিকার রাজনীতিতে ইলন মাস্ক সবকিছু ছাপিয়ে যান ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের পর। ছয়মাসের মাথায় সেই সম্পর্ক চিড় তৈরি হয় নতুন আলোচনা। দু’জনের সম্পর্ক খারাপের মূলে রয়েছে প্রেসিডেন্টের ইচ্ছাপূরণের বিল ‘বিগ এন্ড বিউটিফুল’। ইলন মাস্ক ট্রাম্পের মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেও বিলটি পাস হয়েছে দুই হাউসে। বলা হয়, এ বিলের কারণে প্রেসিডেন্টের যথেচ্ছ খরচের সুযোগ তৈরি হলো। যদিও, ইলন মাস্ক দায়িত্ব পেয়ে বিশ্বজুড়ে মার্কিন সাহায্যের অনেক খাত বন্ধ করে দেন। কৃচ্ছ্রতা সাধনের নামে একের পর এক ফেডারেল বিভাগ বন্ধ, সংকোচন করেন। চাকরি থেকে বিদায় করেছেন হাজার হাজার ফেডারেল কর্মচারিকে।
সম্পর্ক ফিকে হবার পর মাস্ক বক্তব্যে আগ্রাসী হতে গেলে ট্রাম্প তাকে ফল ভোগ করার হুমকি দেন। এরপর মাস্কের সুর নরম হলে অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, বরফ দ্রুত গলে যাবে। নতুন দল গড়ার ঘোষণা দিয়ে সেই সম্ভাবনা কি তাহলে নষ্ট হয়ে গেলো?
ইলন মাস্কের পদক্ষেপ তৃতীয় ধারা তৈরির চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটি অভিমানজনিতপ্রতিক্রিয়াজাত কিনা, নাকি সত্যি একটা অভিযান, অল্প সময়ে কিংবা নতুন কোনো পদক্ষেপ ছাড়া বোঝা মুশকিল। আমেরিকার রাজনীতি দুই দল ভিত্তিক। স্টেটগুলোতেও একই অবস্থা। তৃতীয় শক্তি তৈরির চেষ্টা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। সাফল্য আসেনি।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মাস্ক প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে চান। চারবছর পর পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য অনেকে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। কিন্তু চাইলেই পারেন না। কারণ, প্রতিটি স্টেটে স্থানীয় নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক সমর্থকের সাক্ষর প্রয়োজন। এমন আরো কিছু নিয়মনীতি আছে, যেগুলোতে অর্থ ও সময় প্রচুর ব্যয় হয়। ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান ঘরানার বাইরে গিয়ে তৃতীয় ধারা তৈরি খুব সহজসাধ্য নয় মোটেও। তাছাড়া, শুধু প্রেসিডেন্ট হলে চলবে না, রাজনীতিতে প্রভাবের জন্য সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে প্রভাব রাখার জন্য সেখানেও সদস্য দরকার হবে।