চ্যানেল ওয়ান বিডি ডেক্সঃ
সারাদেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। তবে ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছেড়েন অনেকেই। তাই বর্তমানে যানজটহীন নিরিবিলি শহরে পরিনত হয়েছে ঢাকা। ঈদের ছুটিতে ঢাকায় যারা রয়েছেন আর ফাঁকা শহরে যারা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন তারা এই সময়টাতে বিকেল বেলাতে পরিবার-পরিজন,বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন ঢাকার দর্শনীয় এই ১০টি স্থানে।
এই ১০টি স্থান সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
সাধারণত সরকারি ছুটির দিনগুলোতে এসব স্থান খোলা থাকে। তবে সংস্কার কাজ ও অন্যান্য সমস্যার কারণে অনেক সময় কর্তৃপক্ষ সেগুলো বন্ধ রাখতে পারে। তাই বাসা থেকে বের হওয়ার আগে খোলা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নেবেন।
১। আহসান মঞ্জিলঃ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকার নবাবদের অন্যতম বিখ্যাত আবাসিক ভবন এই আহসান মঞ্জিল। ওয়াইজঘাটে এসে বুলবুল ফাইন আর্টস একাডেমির সামনে গেলেই ঐতিহাসিক ভবনটি নজর কাড়বে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নবাবদের আভিজাত্য উপভোগ করার পাশপাশি পেতে পারেন দুর্দান্ত আনন্দ।
২। লালবাগ কেল্লাঃ: লালবাগ কেল্লা মুঘল আমলে নির্মিত একটি অনন্য ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। দর্শনীয় লাল ইটের কেল্লায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। দুর্গের পাশে অবস্থিত ঐতিহাসিক লালবাগ শাহী মসজিদও দেখে আসতে পারেন।
৩। বলধা গার্ডেনঃ: রাজধানীর ওয়ারীতে অবস্থিত বলধা গার্ডেনে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার প্রজাতির গাছ। এখানে একটি সুন্দর পুকুর আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই বাগানে নানা ধরনের গাছের পাশাপাশি রয়েছে পর্যটকদের জন্য গেস্ট হাউস। অনায়াসেই উপভোগ করতে পারেন এই প্রকৃতির সৌন্দর্যকে।
৪। জাতীয় সংসদ ভবনঃ: রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবনটি শুধু বাংলাদেশেই নয়,বিশ্বের অন্যতম সেরা স্থাপত্যশৈলীর উদাহরণ। আমেরিকান স্থপতি লুই কানের ডিজাইন করা অত্যাধুনিক ভবনটি তার ব্যতিক্রমী আকার এবং নকশার জন্য জনপ্রিয়।
ভবনটিতে সাধারণ মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আশপাশের পরিবেশ,কৃত্রিম লেক ও সড়কের ওপর অস্থায়ী খাবারের দোকানগুলোতে বিকেলে ভিড় জমে।
৫। শিশুমেলাঃ: বর্তমানে শ্যামলীতে ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড নামে পরিচিত শিশুমেলায় শিশুদের খেলাধুলা ও মজা করার বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। আকর্ষণীয় রাইডগুলো তাদের জন্য বিনোদনের একটি আদর্শ মাধ্যম হতে পারে। সেখন প্রাপ্তবয়স্করা তাদের শৈশবের স্মৃতিচারণা করতে পারেন। তাই ঈদের ছুটিতে শিশু পার্কটিতে ঘুরে আসতে পারেন সবাই।
৬। কার্জন হলঃ: কার্জন হল রাজধানীর শাহবাগে অক্সফোর্ডের পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত। ১১৫ বছরের পুরোনো ভবনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশ। দ্বিতল ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে তৎকালীন ভাইসরয় এবং ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড কার্জনের নামে।
লাল ইট দিয়ে সুসজ্জিত ভবনের সামনে একটি সুন্দর ফুলের বাগান রয়েছে। ভবনের পেছনে রয়েছে ৪০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক মুসা খান মসজিদ এবং একটি বিশাল পুকুর।
৭। হাতিরঝিলঃ: মগবাজার থেকে রামপুরা ও গুলশান পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়ায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী ওয়াটার বাসে পুরো হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে আসা যায়। হাতিরঝিলের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে রাতে ঘুরে আসতে পারেন হাতিরঝিলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য। আলো এবং ঠান্ডা বাতাসে মন ও আত্মাকে প্রশান্ত করবে।
৮। রমনা পার্কঃ: রাজধানীর শাহবাগের মিন্টু রোড ও বেইলি রোড এলাকায় রয়েছে রমনা পার্ক। পার্কটিতে রয়েছে নানা ধরনের গাছগাছালি এবং সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ। রমনা পার্ক হতে পারে আপনার পরিবারের সঙ্গে ঘুরে আসার জন্য একটি আদর্শ জায়গা।
৯। জাতীয় চিড়িয়াখানাঃ: ঈদের ছুটিতে রাজধানী মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরে আসতে পারেন প্রাণিপ্রেমীরা। চিড়িয়াখানায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার থেকে শুরু করে বনের রাজা সিংহ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী থাকবে। জাতীয় চিড়িয়াখানায় প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ভিড় করে।
১০। জাতীয় জাদুঘরঃ: রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর। জাদুঘরটি সুসংগঠিত,নৃতাত্ত্বিক ও আলঙ্কারিক দিকগুলোতেও অনন্য। এই বিশাল ভবনের প্রতিটি কক্ষ শিল্প বিভাগ,ইতিহাস এবং ধ্রুপদী শিল্প বিভাগ,প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগ এবং সমসাময়িক বা বিশ্ব সভ্যতা বিভাগের মতো বিভিন্ন বিভাগে সাজানো হয়েছে। যার সবগুলো একদিনে ভ্রমণ করা যায় না। জাদুঘরে একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার রয়েছে।
দেশ-বিদেশ থেকে শিখতে চাইলে,জ্ঞান অর্জন করতে এবং একই সঙ্গে ঘুরাঘুরি উপভোগ করতে চাইলে ঈদের ছুটিতে জাতীয় জাদুঘরকে আপনার ঘুরাঘুরির তালিকায় এক নম্বরে রাখতে পারেন। যান্ত্রিক জীবনে ক্লান্ত হয়ে পড়া মন ও শরীরকে একটু চাঙ্গা করে তুলতে পারেন বিশেষ বিশেষ ছুটির দিন গুলোতে। অবসরে কিছুটা সময় পেলে ঘুরে আসুন এই স্থান গুলোতে।
সম্পাদকঃ মো শফিকুল ইসলাম, নির্বাহী সম্পাদক: কাজী মোস্তফা রুমি, বার্তা সম্পাদকঃ ফারহানা বি হেনা।
বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল।
Copyright © 2025 Channel One BD. All rights reserved.