তাসদিকুল হাসান, জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শেষণের শিক্ষার্থী সৌরভ বিশ্বাস এর উপর হামলা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। সোমবার দুপুর ১ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সৌরভ প্রেশার মাপার পর মেডিকেল সেন্টারের এসিস্টেন্টের পরামর্শ চায়। এসময় সৌরভ চেয়ার ছেড়ে না দেয়ায় সিনিয়র দুই মেয়ে শিক্ষার্থী সামিরা মাহমুদ এবং রিসাত আরা নানা রকম প্রশ্ন করে অসুস্থ সৌরভকে তর্কে জড়ায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সৌরভকে মেডিকেল সেন্টারের বাইরে ডেকে এনে গালিগালাজ করা হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ডেকে সৌরভকে মারার নির্দেশ দেয় নারী শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রলীগের কর্মী ইকবাল মাহমুদ রানা, মিলন মাহফুজ, আতিক, সৈকত, মিনন মাহফুজ, মিরাজ হোসাইন, সজীব বুদ্ধসহ আরও বেশ কয়েকজন দফায় দফায় পেটায়। এক পর্যায়ে মাটিতে ফেলে মারধর করে। প্রাণে বাঁচার জন্য নিজ বিভাগে গেলে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টারে আনা হয় সৌরভকে। তখন মেডিকেল সেন্টার থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে আবার মারধর করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সৌরভকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
অপরদিকে মেয়ে শিক্ষার্থী দুইজন সামিরা মাহমুদ এবং রিসাত আরার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট থেকে জানা যায় সৌরভের জনসম্মুখে ইভটিজিং এর কথা। এমনকি গায়ে হাত তুলার কথাও বলেন তারা। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এ বিষয়ে সমালোচনা করলে তারা ফেইসবুক পোস্ট এর প্রাইভেসি চেঞ্জ করে দেয়।
সামিরা মাহমুদ মিথী তার অভিযোগপত্রে বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় আমাদের মেডিকেল সেন্টারে যাই সেখানে আমি এবং আমার এক জুনিয়র রিসাত আরা সৌরভ নামের এক ছেলের দ্বারা প্রথমত বেয়াদবি মূলক আচরণের স্বীকার হই, তারপর অকথ্য ভাষায় গলাগালি এবং যৌন-হয়রানি মূলক ইঙ্গিত দেয়, সাথে তোকে দেখে নিবো এরকম হুমকি প্রদান করে৷ আমি সিনিয়র জানার পরও তোকে খেয়ে ফেলবো ব্যাচ জানার প্রয়োজন নেই এমন ভাষায় কথা বলে।
এ বিষয়ে সৌরভ বলে, “ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওরা মিথ্যা গল্প বানিয়ে প্রক্টর অফিসে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আর ওনারা ফেসবুকে যে পোস্ট দিছে তা যে মিথ্যা তার প্রমাণ ওনাদের সাথে যে ছেলে ছিলো তার কথা ওনারা কোথাও উল্লেখ করে নায়।”
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসাইন বলেন, ” এ ছেলে ইভটিজিং করেছে। তখন মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে ছেলেরা ওকে মারধর করেছে হয়তো। আমি ঘটনা স্থলে ছিলাম না। বিষয়টি আমি দেখবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমার কাছে লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত করে আমি ব্যবস্থা নিবো।”